নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সহজ প্রক্রিয়া
বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া সহজ হলেও, এটি পেতে কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া এবং শর্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে, আপনি যদি নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পান, তাহলে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানাবো, নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পুরো প্রক্রিয়া কীভাবে হবে।
১. লার্নার লাইসেন্স (শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স) পাওয়ার প্রক্রিয়া
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রথম ধাপ হল লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স নেয়া। এটি মূলত একটি প্রাথমিক লাইসেন্স, যা আপনার ড্রাইভিং শেখার প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে।
লার্নার লাইসেন্সের জন্য শর্ত:
- আবেদনকারীকে কমপক্ষে ১৮ বছর বয়সী হতে হবে।
- আবেদনকারীর ন্যূনতম ৮ম শ্রেণী পাস হতে হবে।
- আবেদনকারীকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ হতে হবে।
- আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) থাকতে হবে।
- লার্নার লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:
- আবেদনকারীর ছবি (সর্বোচ্চ ১৫০ কেবি)।
- মেডিকেল সার্টিফিকেট (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)।
- জাতীয় পরিচয়পত্রের স্ক্যান কপি।
- ইউটিলিটি বিলের কপি (যদি ঠিকানা ভিন্ন হয়)।
লার্নার লাইসেন্স আবেদন পদ্ধতি:
১. প্রথমে বিআরটিএ-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা সার্ভিস পোর্টাল (BSP) এ প্রবেশ করুন।
২. সেখান থেকে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
৩. সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে পূর্ণ করার পর, অনলাইনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করুন।
৪. ফি পরিশোধ করার পর, আপনার লার্নার লাইসেন্স পাবেন।
২. ড্রাইভিং পরীক্ষা (Driving Test)
লার্নার লাইসেন্স পাওয়ার পর, আপনাকে এক ধরনের দক্ষতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এই পরীক্ষা আপনাকে আপনার ড্রাইভিং দক্ষতা এবং ট্রাফিক আইন জানার বিষয়টি যাচাই করবে।
ড্রাইভিং পরীক্ষার ধাপ
- প্রথমত: আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিআরটিএ এর ট্রেনিং সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে।
- দ্বিতীয়ত: পরীক্ষায় প্রার্থীকে সড়কে গাড়ি চালানোর ক্ষমতা, ট্রাফিক আইন জানার দক্ষতা এবং গাড়ি চালানোর অন্যান্য বিষয়গুলোর পরীক্ষা নিতে হবে।
- তৃতীয়ত: পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে, আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে।
৩. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন
যদি আপনি পেশাদার ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতে চান, তাহলে আপনাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। এটি পেতে আপনাকে কিছু অতিরিক্ত শর্ত পূরণ করতে হবে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের শর্ত:
- আবেদনকারীকে অবশ্যই ২১ বছর বয়সী হতে হবে।
- এক্সট্রা শর্ত হিসেবে ডোপ টেস্ট রিপোর্টও জমা দিতে হবে।
- পেশাদার লাইসেন্স পেতে কিছু নির্দিষ্ট ফি ও মেডিক্যাল রিপোর্টও জমা দিতে হবে।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন পদ্ধতি
১. বিআরটিএ ওয়েবসাইট থেকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করুন।
২. পেশাদার লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করুন।
৩. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধ করুন।
৪. স্মার্ট কার্ড (Smart Card) প্রাপ্তি
ড্রাইভিং পরীক্ষা এবং ফি জমা দেওয়ার পর, আপনি স্মার্ট কার্ড পেতে পারবেন। এটি একটি আধুনিক ড্রাইভিং লাইসেন্স যা তথ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। স্মার্ট কার্ডটি আপনার নাম, ফটো, লাইসেন্সের শর্তাবলী ও অন্যান্য তথ্য ধারণ করে।
স্মার্ট কার্ডের জন্য শর্ত
- পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া।
- সঠিক ফি পরিশোধ করা।
- সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সঠিকভাবে জমা দেয়া।
স্মার্ট কার্ডের প্রাপ্তি প্রক্রিয়া: পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর, বিআরটিএ স্মার্ট কার্ড তৈরি করে এবং এটি ডাকযোগে আপনার ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। স্মার্ট কার্ড হাতে পাওয়ার পর আপনি এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কত টাকা লাগে
৫. ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ (Renewal)
যে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হলে, সেটি রিনিউ করতে হয়। রিনিউয়াল পদ্ধতিটি খুবই সহজ। আপনি অনলাইনে বা বিআরটিএ অফিসে গিয়ে এটি করতে পারেন।
লাইসেন্স রিনিউ করার জন্য শর্ত:
- লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে রিনিউ করতে হবে।
- রিনিউয়ের জন্য পূর্বের লাইসেন্সের কপি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস থাকতে হবে।
রিনিউয়ের জন্য পদ্ধতি:
- বিআরটিএ ওয়েবসাইটে গিয়ে রিনিউ আবেদন করতে হবে।
- ফি পরিশোধের পর রিনিউ করা হবে।
- আপনি এক্ষেত্রে স্মার্ট কার্ডের নতুন ভার্সনও পেতে পারেন।
উপসংহার
নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া অনেক সহজ হয়ে গেছে। বিআরটিএ’র ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আপনি বাড়িতে বসেই সব কাজ করতে পারেন। আপনার লাইসেন্সের আবেদন থেকে শুরু করে পরীক্ষার ফলাফল চেক পর্যন্ত সব কিছুই এখন অনলাইনে করা সম্ভব। তাই আর দেরি না করে এখনই আবেদন করুন এবং আপনার নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যান।